Header Ads

Header ADS

"মাঝে মাঝে মাওলানা রুমি আমার স্বপ্নে এসে দেখা করেন"


কোলম্যান বার্কস, একজন মার্কিন কবি, মূলতঃ তার করা অনুবাদের মাধ্যমে মাওলানা রুমির কবিতা সারাবিশ্বে, বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্বের নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। তার ইংরেজি অনুবাদ ২০ লক্ষ কপিরও বেশি বিক্রি হয়েছে এবং প্রতিবছর বিক্রি বেড়েই চলেছে। তার এই বই থেকে পরবর্তীতে আরও ২৩টি ভাষায় অনুবাদ হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে সারাবিশ্বে।


যে নুড়ি কুড়ায়, সেও কিছু পায়। কোলম্যান বার্কস মাওলানা রুমির কবিতা পড়ার সময় নিজের অনুবাদক বা কবি পরিচয় হারিয়ে ফেলেন। তিনিও হয়ে যান প্রেমিক, প্রেমাস্পদকে পাওয়ার তীব্র আকাঙ্খা জন্ম হয় তার হৃদয়ে।

তিনি বলেন, "আমি মুসলমানদের সারিতে চলে যাইনি। এখনো খ্রিস্টান ধর্মে আছি। তবে মুসলমান হতে বাকিও কিছু নেই।" মাওলানা রুমি বলেছেন, সব ধর্মেই প্রেমের কথা আছে। কিন্তু প্রেমের নির্দিষ্ট কোন ধর্ম নেই।

এরপর কোলম্যান বার্কস বলতে থাকেন, "বাওয়া মহিউদ্দিন নামে শ্রীলঙ্কার একজন আধ্যাত্মিক ধর্মগুরুর সন্ধান পেয়েছি। তিনিও একজন প্রেমের পথের পথিক। আমি তার হাতে হাত রেখে মুরিদ হয়েছি। শয়তানের অনুগামী হইনি।"

সত্যবাদীদের সঙ্গী না হলে আল্লাহকে পাওয়া দুরূহ একটা কাজ। মাওলানা রুমির কবিতা পড়ে কোলম্যান বার্কসের হৃদয়ের গভীরে অচেনা কোন বাঁশি বিরহে কেঁদে উঠেছিলো। জন্ম থেকে সেই বাঁশি তার সঙ্গেই ছিলো, অথচ আগে কখনো টের পান নি। নিজেকে খুঁজে পেতে তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েন। অজানার প্রতি প্রেম তাকে শ্রীলঙ্কা পর্যন্ত ছুটিয়ে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে তিনি একজন সঙ্গী পেলেন। প্রেমের পথে সঙ্গী ছাড়া চলা দুরূহতম কাজ।

কোলম্যান বার্কস এরপর বলেন, "মাওলানা জালালুদ্দিন রুমি আমাকে অলক্ষে শিক্ষাদান করেন। মাঝে মাঝে তিনি আমার স্বপ্নে এসে দেখা করেন। আমি তার সাথে আমার হাত মোসাহবা করি। তার মাধ্যমেই জগতের শিক্ষক মুহাম্মদ (সাঃ) এর দেখা পেয়েছি।"

সবশেষে তিনি বলেন, "আমি যদি মুসলমান না হয়ে থাকি, তাহলে মুসলমান কে?"

মাওলানা রুমির মসনবি শরিফ পড়ার পর শুধু মুসলিম নয়, অন্য ধর্মাবলম্বীরাও মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হয়েছেন এবং এখনো হচ্ছেন। তাদের অনেকেই সত্য পথের সন্ধান খুঁজতে খুঁজতে ইসলাম ধর্মের ছায়াতলে চলে এসেছেন। যে ব্যক্তি মসনবি শরিফের জগতে প্রবেশ করে, সে আর অক্ষত হৃদয় নিয়ে ফিরে যেতে পারে না। পরম প্রেম তাকে ক্ষতবিক্ষত করে দেয়।

উল্লেখ্য কোলম্যান বার্কসের অনুবাদ নিয়ে বিতর্ক আছে। তিনি ফারসি ভাষা ভালোভাবে জানতেন না। তাছাড়া জন্মগতভাবে মুসলিম এবং ইসলামের পন্ডিত ব্যক্তিও মসনবির গভীর রহস্য বুঝতে ভুল করেন। সেখানে কোলম্যান বার্কসের ভুল হওয়াটা স্বাভাবিক। তিনি ইসলামের গূঢ় তত্ত্ব সম্পর্কে অনভিজ্ঞ ছিলেন বলেই অনুবাদে যথাযথ অর্থ প্রকাশ করতে পারেন নি। মাওলানা রুমি নামক বিশাল সমুদ্রের এক অঞ্জলি পানির ঝাপটা পশ্চিমা বিশ্বকে উলটপালট করে দিলো। আমার বিশ্বাস মসনবি শরিফের প্রকৃত অনুবাদ প্রকাশিত হলে এইসব দেশে প্রেমিক ছাড়া কোন মানুষ হয়তো আর থাকবে না।

মাওলানা রুমি বিষয়ক তার বই

মাওলানা রুমিকে নিয়ে তার বই ২০ খন্ড পেরিয়ে গেছে অনেক আগেই। এখানে তার কিছু বইয়ের নাম দিলাম।

১) দ্যা হ্যান্ড অফ পোয়েট্রি
২) ফাইভ মিস্টিক পোয়েটস অফ পারসিয়া (১৯৯৩)
৩) দ্যা ইসেনশিয়াল রুমি (১৯৯৫)
৪) দ্যা বুক অফ লাভ (২০০৩)
৫) আ ইয়ার উইথ রুমি (২০০৬)

তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া, গুডরিডস, (ইনসানে কামেল) মাওলানা রুমির অলৌকিক বাগান এবং অন্যান্য

লেখকঃ আমির আব্দুল্লাহ 

কোন মন্তব্য নেই

rusm থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.