গিনেজ বুক রেকর্ডে সুফি ঘূর্ণন নৃত্য
সুফি ঘূর্ণন নৃত্যে পারদর্শীতার জন্য গিনেজ বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম লিখিয়েছেন অনেকে। একজনের রেকর্ড ভাঙতে অন্যরা চেষ্টা চালিয়েছেন বছরের পর বছর। তবে বলে রাখা ভালো এই বিশ্ব রেকর্ড করা হয় নাচের কসরতের উপর ভিত্তি করে, আধ্যাত্মিকতা উপর ভিত্তি করে নয়।
একক ব্যক্তি হিসেবে ১ ঘন্টায় সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ঘুরে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন শফিক ইব্রাহিম আব্দেল হামেদ। তিনি ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি কাসাবা রেস্টুরেন্ট এন্ড লঞ্জ, উত্তর লন্ডন, যুক্তরাজ্যে এই রেকর্ড স্থাপন করেন। শফিক ইব্রাহিম আব্দেল হামেদ এক ঘন্টায় ২৯০৫ বার ঘুরে সুফি নৃত্য শেষ করেন। মহিলা ক্যাটাগরিতে সবচেয়ে বেশি ঘুরেছেন তারা লি ওয়েকলি। তিনি এক ঘন্টায় সর্বমোট ২১৯১ বার ঘুরেছেন। তিনিও আব্দেল হামেদের মত ২০১২ সালে লন্ডনেই এই রেকর্ড স্থাপন করেন। এরপর ২০১৫ সালে নিকোলে ম্যাকলারেন জুরিখে ৩৫৫২ বার ঘুরে তাদের রেকর্ড ভেঙে ফেলেন।
সুফি নৃত্যের প্রতিযোগিতা শুধু ঘূর্ণ্নের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে নি। কে কত ঘন্টা একটানা ঘুরতে পারেন এটা নিয়েও চলেছে একে অন্যকে ছাড়িয়ে যাওয়ার লড়াই। এক ব্যক্তি টানা চার ঘন্টা সুফি ঘূর্ণন নৃত্য করে রেকর্ড অর্জন করেন। তাইওয়ানে আয়োজিত হয় ব্যতিক্রমী সুফি নৃত্য। তারা ২০১১ সালের ২০ নভেম্বর ৭৫৫ জন একসাথে সুফি নৃত্য দেখিয়ে রেকর্ড স্থাপন করেছিলেন। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে তাইওয়ান ক্যান্সার ফ্রেন্ড নিউ লাইফ অ্যাসোসিয়েশন (Taiwan Cancer Friends New Life Association)। এটি অনুষ্ঠিত হয় তাইওয়ান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে। এর পুর্বে এতো মানুষ একসাথে এই ঘূর্ণন নৃত্যে অংশগ্রহণ করেন নি। উল্লেখ্য গিনেজ বিশ্ব রেকর্ড ( Guiness World Records), যা ২০০০ সাল থেকে গিনেজ বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস নামে পরিচিত। এটি একটি বার্ষিক প্রকাশনাবিশেষ। এতে বিশ্বের যাবতীয় রেকর্ডসমূহ নথিবদ্ধ থাকে। ১৭৫৯ সালে আর্থার গিনেস ডাবলিনের সেন্ট জেমস্ গেট নামক স্থানে গিনেস ব্রিউরি নামক একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করেন।
সুফি ঘূর্ণন নৃত্যের প্রবর্তক মাওলানা রুমি। তার মাধ্যমে সুফি ঘূর্ণন নৃত্যের শুরু হয়েছিলো কোনিয়ার এক বাগানে। মূলত দৈহিক কসরত দেখানো বা দর্শকের মনোরঞ্জনের জন্য নয়, বরং শরীর ও মনকে পরম শক্তির কেন্দ্রবিন্দুর কাছে সমর্পিত করার মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি লাভ করার জন্য এই নৃত্যের শুরু হয়েছিলো। বিস্তারিত জানতে এই নিবন্ধটি পড়ুন।
তথ্যসূত্রঃ
আরও দেখুনঃ শেখ সাদির গল্প, মাওলানা রুমির উক্তি
লেখকঃ আমির আব্দুল্লাহ
কোন মন্তব্য নেই