Header Ads

Header ADS

খাজা মঈনুদ্দিন চিশতির বই থেকে ভবিষ্যতবানী (পর্ব-১)


ভারতীয় উপমহাদেশে যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ইসলাম ধর্মের প্রচার ও প্রতিষ্ঠা হয়েছে তাদের মধ্যে খাজা মইনুদ্দিন চিশতি (১১৪১-১২৩৬) অগ্রগণ্য। তিনি তার পথপ্রদর্শক খাজা ওসমান হারুনির সাথে সহচর্যের দিনগুলোর স্মৃতি নিয়ে লিখেছেন “আনিসুল আরওয়াহ” বইটি। এই বই থেকে কিছু ভবিষ্যতবানী আজ আমরা দেখবো, যা অধিকাংশই আজকের বাস্তবতার সাথে মিলে যাচ্ছে।

এছাড়া পড়ুন শাহ নিয়ামতুল্লাহর ক্বাসিদা। এই ক্বাসিদায় বলা ভবিষ্যতবানীও অক্ষরে অক্ষরে মিলে যাচ্ছে।

খাজা মইনুদ্দিন চিশতি তার গুরু খাজা ওসমান হারুনির এক ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন বইটির তৃতীয় মজলিসে। সেখানে খাজা ওসমান হারুনি তার গুরু খাজা মউদুদ চিশতির কিছু কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন খাজা মঈনুদ্দিন চিশতিকে। কিয়ামতের পূর্বে পৃথিবীর শহরগুলোর অবস্থা কেমন হবে সে সম্পর্কিত হাদিস বর্ণনার পরে তিনি কিছু ভবিষ্যতবানী করেন।

খাজা মউদুদ চিশতি বলেছেন, মক্কা-মদীনায় দুর্দিন নেমে আসবে। একদল কালো মানুষ এসে মক্কার মানুষকে হত্যা করবে। কালো মানুষ বলতে আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গদের বুঝানো হয়েছে। তাদের কারণে মক্কা হয়ে যাবে জনশূন্য। মদিনায় দুর্ভিক্ষ আসবে। প্রচুর মানুষ না খেয়ে মারা যাবে। খোরাসান ধ্বংস হয়ে যাবে কপটতার জন্য। সিরিয়ায় অত্যাচারী বাদশাহ ক্ষমতায় আসবে। সে হবে অনেক অত্যাচারী। তার অত্যাচারের জন্য সিরিয়া ধ্বংস হয়ে যাবে। আকাশ থেকে এক ধরনের পোকা বা পতঙ্গ নেমে আসবে। তারা মানুষের ফসল খেয়ে ফেলবে। রোম ধ্বংস হয়ে যাবে সমকামীতার জন্য। রোম বা রোমান বলতে শুধুমাত্র ইতালির জনগণকে বুঝানো হয় না। বরং এর দ্বারা ইউরোপীয়দের বুঝানো হয়ে থাকে।

এরপর তখনকার মুসলমানদের অবস্থা সম্পর্কে বলেছেন, তারা সুদে জড়িয়ে যাবে। মুসলমান সুদ খাবে। তারা হবে নরখাদক, অর্থাৎ একে অন্যকে ঠকাবে, হত্যা করবে, অন্যের সম্পদ নিজেরা অন্যায়ভাবে ভোগ করবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসতে থাকবে। বিভিন্ন শহর ভূমিকম্পের জন্য ধ্বংস হয়ে যাবে। মিশরে মেয়েদের উপর অমানবিক নির্যাতন করা হবে। সেখানে কোন নারীর মর্যাদা থাকবে না। ইরান ধ্বংস হবে। তিনি বলেন ইরান ধ্বংস হবে হিন্দুস্তানের কারণে। সম্ভবত হিন্দুস্তান-ইরান যুদ্ধের দিকে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।  হিন্দুস্তানে তখন ফিতনা-ফ্যাসাদ, জেনা-ব্যাভিচার বেড়ে যাবে। মানুষ প্রকাশ্যে মদ খাবে। এভাবে একদিন বাকি শহরগুলোও ধ্বংস হয়ে যেতে থাকবে। প্রচুর মানুষ মারা যাবে। এভাবে দুনিয়ায় অল্প কিছু লোক অবশিষ্ট থাকবে। আর তারাই মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহর দেখা পাবে। হাদিস অনুযায়ী মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ হলো ইমাম মেহেদির জন্মগত নাম। ইমাম মেহেদি আসার পর দুনিয়া থেকে  সমস্ত অন্যায় দূর হয়ে যাবে। পৃথিবীতে আবার মানুষের অধিকার এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।

অতীত এবং বর্তমান অনেক ঘটনার সাথেই এই কথাগুলো মিলে যাচ্ছে। পৃথিবী এদিকেই এগিয়ে যাচ্ছে দিন দিন। তবে ভবিষ্যতে কি হবে তা একমাত্র আল্লাহ জানেন। আল্লাহ চাইলে তার কোন বান্দাকে ভবিষ্যতের খবর দিতে পারেন যেন অন্যরা সাবধান হয়।

তথ্যসূত্র

আনিসুল আরওয়াহ (রশীদ বুক হাউস থেকে প্রকাশিত)
তৃতীয় মজলিস পৃষ্ঠাঃ ২২ থেকে ২৩

আরও দেখুন


লেখাঃ মিজানুর রহমান

কোন মন্তব্য নেই

rusm থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.