Header Ads

Header ADS

ইবনে আরাবির সাথে মাওলানা রুমির সাক্ষাৎ (পর্ব-২)


সদর-আল-দ্বীন মাওলানা রুমি এবং ইবনে আরাবির মধ্যে সেতুবন্ধন স্থাপন করেছেন। কে এই সদর-আল-দ্বীন? আজ আমরা তার সম্পর্কে জানবো।

সদর-আল-দ্বীন মাওলানা রুমির একজন ঘনিষ্ঠ সহচর এবং বন্ধু। সবসময় তিনি মাওলানার সাথে উঠাবসা করতেন। বিপদে-আপদে পাশে থাকতেন। অপরদিকে ইবনে আরাবির সাথে সদর-আল-দ্বীন বিবাহের মাধ্যমে আত্মীয়তার সম্পর্কে যুক্ত ছিলেন। তিনি ছিলেন ইবনে আরাবির জামাতা এবং ছাত্র।

এছাড়াও আরও দুইজন ব্যক্তি ছিলেন যারা একইসাথে ইবনে আরাবি এবং মাওলানা রুমির সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখতেন। তাদের একজন হলেন ফখর-আল-দ্বীন ইরাকি এবং আওহাদ-আল-দ্বীন কিরমানি। তারা দুজনেই ইবনে আরাবির ছাত্র ছিলেন এবং সদর-আল-দ্বীনের সাথে ছিলো খুবই ভালো সম্পর্ক। সদর-আল-দ্বীনকে নিয়ে ফখর-আল-দ্বীন ইরাকির একটা কবিতা এক্ষেত্রে উল্লেখ করা যায়।
তিনি লিখেছেন, "আমার হৃদয় তোমাকেই বেশি আকড়ে ধরতে চায় হে সদর-আল-দ্বীন, যেন সে আত্মাকে ছেড়ে দিতে পারবে, তবু তোমার বিচ্ছেদ মেনে নিতে পারবে না।" ফখর-আল-দ্বীন ইরাকি, কুল্লিয়াত, ৪৭-৯


এই তিনজন ব্যক্তিকে মনে করা হয় ইবনে আরাবি ও মাওলানা রুমির মধ্যকার সংযোগ রেখা। তবে তাদের মধ্যে সদর-আল-দ্বীনের সাথে মাওলানা রুমির ঘনিষ্ঠতা ছিলো সবচেয়ে বেশী। জ্ঞান এবং প্রেমে তিনি ছিলেন বাকি দুইজনের মধ্যে অগ্রগামী। তিনি ইবনে আরাবির লেখা বই মাওলানা রুমিকে এনে দিতেন। মাওলানা রুমি সেই বইগুলো পড়তেন। এছাড়া ইবনে আরাবির বিভিন্ন মন্তব্য, আদর্শ, জ্ঞান মৌখিকভাবেও সদর-আল-দ্বীনের মাধ্যমে অর্জন করেছেন। তবে তৃতীয় উৎস ছাড়াও মাওলানা রুমি ইবনে আরাবির কাছ থেকে সরাসরি জ্ঞানলাভ করেছেন বলে ঐতিহাসিক দাবী রয়েছে। কারণ তিনি আনুমানিক ১২৩৩-৩৭ পর্যন্ত চার বছর দামেস্কে ছিলেন। ঠিক সেই সময় ইবনে আরাবি দামেস্কে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। সেখানে তার অনেক ছাত্র ছিলো। এটা অসম্ভব যে ইবনে আরাবির কাছে মাওলানা রুমি তখন জ্ঞান অর্জন করতে না যেয়ে দূরে থেকেছেন। কারণ দামেস্কের এমন কোন আলেম ছিলো না যার কাছে মাওলানা রুমি যান নি। সেই হিসেবে বলা যায় তখনই ইবনে আরাবির সাথে তার দেখা হয়েছে এবং বারবার দেখা হয়েছে। অপরদিকে শামস তাবরিজি বলতেন ইবনে আরাবি হলো জ্ঞানের পাহাড় এবং তালিব-ই-হক্ব। শামস তাবরিজির সাথে ইবনে আরাবির সম্পর্ক নিয়ে আলাদা একটা নিবন্ধের প্রয়োজন। কারণ তাদের মধ্যে রহস্যময় একটা সম্পর্ক ছিলো। মাওলানা রুমি যখন শামস তাবরিজির কাছ থেকে দীক্ষালাভ করছিলেন, তখন হতে পারে তিনি ইবনে আরাবি সম্পর্কেও কিছু জেনে থাকবেন। এরকম বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করা যায় যে ইবনে আরাবির সাথে মাওলানা রুমির সামনা-সামনি সাক্ষাৎ, জ্ঞান বিনিময়, তৃতীয় মাধ্যমের দ্বারা সাক্ষাৎ অবশ্যই ঘটেছিলো। কিন্তু মাওলানা রুমি কতটুকু প্রভাবিত হয়েছিলেন ইবনে আরাবির দ্বারা? মৌলভিয়া-জালালিয়া তরীকায় কতটুকু প্রভাব পড়েছে ইবনে আরাবির? মাওলানা রুমি প্রকৃতপক্ষে শামস তাবরিজির মাধ্যমে প্রভাবিত, বলা যেতে পারে একদম মন্ত্রমুগ্ধ। তাই অন্যান্য বিদ্বানের প্রভাব তার জীবন ও কর্মে অল্পই পরিলক্ষিত হয়েছে।

তথ্যসূত্রঃ

১) William C. Chittick, ìThe Last Will and Testament of Ibn °Arabµís Foremost Disciple and Some Notes on its Author,î Sophia Perennis 4/1 (1978): 43ñ58; idem, ìÕadr al-Dµn al-K¨nawµî, EI2. Henry Corbin prefers the spelling of Õadr al-Dµnís name as Q¨nyawµ, which is a more literal adjective referring to one who hails from Q¨niya (Konya). See Henry Corbin, History of Islamic Philosophy, trans. Liadain Sherrard and Philip Sherrard (London: KPI, 1993), 296. 15. He was the spiritual men
২) আফলাকি, মানাক্বিব আল আরিফিন, ১ঃ৮০-১
৩) এস খলিলুল্লাহর অনুবাদকৃত দিওয়ান-ই-শামস-ই তাবরিজির ভূমিকাংশ (ইরা ফ্রিডল্যান্ডারের ভূমিকা)
৪) মাওলানা আব্দুল মজীদের অনুবাদকৃত মসনবীয়ে রুমির ভূমিকাংশ ইত্যাদি।
৫) এন্ড্রু হার্ভের "রাগমার্গ" 
৬) Did the Two Oceans Meet? Connections and Disconnections between Ibn al-°Arabµ and R¨mµ* by Omid Safi

কোন মন্তব্য নেই

rusm থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.